ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার ২৫টি সেরা কার্যকরী উপায়
৩০টিরও বেশি স্থানীয় ব্যবসার ইউনিক আইডিয়া।ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার জন্য খুব সহজ কিছু মাধ্যম রয়েছে। আপনি যদি ছাত্র অবস্থায় নিজের খরচ নিজে বহন করতে চান তবে আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কথায় বলে,ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। কথাটি খুব সত্যি।
ছাত্র অবস্থায় এখনও যারা বাবা-মায়ের উপর নির্ভরশীল, নিজেরা কিছু করতে চাচ্ছেন কিন্তু কি করবেন,কিভাবে করবেন বুঝতে পারছেন না তাদের জন্যই আমার এই আলোচনা।ছাত্র অবস্থায় খুব কম পূঁজিতে অথবা বিনা পূঁজিতে আয় করার কিছু কার্যকরী উপায় শেয়ার করছি।
পেজ সূচিপত্রঃ
পরীক্ষার গার্ড হয়ে আয়
ধরুন আপনি শহরে নতুন এসেছেন। কাউকে চেনেন না। তেমন কোন স্কিল ও নেই। এই অবস্থায় আপনি বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। কোচিং সেন্টারে বিভিন্ন পরীক্ষার সময় গার্ডের প্রয়োজন হয়। আপনি যদি পরীক্ষার গার্ডের চাকুরীটা করতে পারেন তবে এখান থেকে চলার মতো কিছু আয় করতে পারবেন।
শুধু শহরের কথায় বা বলি কেন ,এখন তো গ্রামেও কোচিং সেন্টার চালু হয়েছে। গ্রামেও আপনি চাইলে এই কাজটির মাধ্যমে কিছু আয় করতে পারেন।
সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ হয়ে আয়
আপনি যদি ভালো কথা বলতে পারেন, উপস্থাপন যদি ভালো হয় তবে আপনি সহজেই সেলস রিপ্রেজেটেটিভ এর কাজটি করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে বিভিন্ন ইভেন্টের খোঁজ রাখতে হবে। যেমন-বইমেলা,ট্যুরমেলা,বানিজ্যমেলা, ফুল মেলা,হস্তশিল্পমেলা ইত্যাদি।
এই জন্য আপনাকে প্রতিদিন মেলাতে গিয়ে সব দোকানে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে কোন দোকানে এই পজিশনে লোক লাগবে কিনা। অনেক সময় দোকানে লোকের প্রয়োজন কিন্তু লোক পাওয়া যায়না। আবার আপনার বাচন ভঙ্গি যদি তাদের পছন্দ হয় তবে এমনিতেই তাদের সাথে কাজ করার সযোগ পেতে পারেন।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মাধ্যমে আয়
আপনি কি ভালো কথা বলতে পারেন? উচ্চারন পরিস্কার? উপস্থাপনা ভালো পারেন?তাহলে কাজটি আপনার জন্যই। অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য আপনাকেই খুজছে কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন মেলা, ইভেন্ট আয়োজক, ভালো উপস্থাপক চাই। একটা অনুষ্ঠানকে প্রানবন্ত করতে উপস্থাপকের গুরুত্ব অনেক।
শুধু অনুষ্ঠান না ,বেতারে বিভিন্ন শাখায় চুক্তিভিত্তিক বা পার্ট টাইম কাজের সুযোগ রয়েছে। আপনি বেতার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে কোন কাজ পেয়ে যেতে পারেন।
ট্রান্সলেট বা অনুবাদ করে আয়
আপনি কি বাংলা ভাষা ছাড়াও অন্য কোন ভাষায় পারদর্শী? যদি হয়ে থাকেন তাহলে এই বিশেষ গুণটির জন্য আপনি অনেকের থেকে এগিয়ে আছেন।বাংলা ভাষায় কোন বই বা কোন তথ্য অন্য বিদেশী ভাষাতে রুপান্তর করে খুব ভালো আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে করে নিজের দেশের সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
আবার আমাদের দেশের অনেক মানুষ রয়েছে যারা বাংলা ভাষা ছাড়াও তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলে। অনেক আদিবাসী উপজাতিদের ভাষা ভিন্ন। অন্য ভাষাভাষী ছাত্ররা এই সু্যোগ কাজে লাগাতে পারেন। অন্য যে কোন ভাষার বই,লেখা,তথ্য ইত্যাদি নিজের মাতৃ ভাষায় রুপান্তর করে নিজের কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে পারেন।
এছাড়াও কোন বিদেশী মানুষ আসলে তাকেও তার ভাষায় বোঝাতে সাহায্য করতে পারেন।বর্তমানে একজন অনুবাদকের অনেক চাহিদা রয়েছে। সেটা দেশেই হোক বা বিদেশে। ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার ভালো মাধ্যম হতে পারে এই পেশা।
ক্যাম্পাসে সহজ উপায়ে বিজনেস
কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খুব সহজ কিছু উপায়ে বিজনেস শুরু করতে পারেন। এতে পড়াশুনার পাশাপাশি ভালো আয় করা যায়। যেমন-বিভিন্ন ইভেন্টের আয়োজন করতে পারেন। কয়েকজন মিলে গ্রুপ তৈরি করে বিভিন্ন ইভেন্টের আয়জক হতে পারেন।
আবার বিভিন্ন টিশার্ট তৈরি, লোগো ডিজাইন,অর্ডার নেওয়া, সময় মতো সরবরাহ করা ইত্যাদি কাজগুলো চাইলেই করতে পারেন।আবার অনেকে বিভিন্ন ডিজাইন করতে পছন্দ করেন তারা পোস্টার ডিজাইন করতে পারেন।আপনি ভালো ক্রিয়েটিভ হলে ব্যানার ডিজাইন,লগো ইত্যাদি বানাতে পারেন।
তাছাড়াও প্রিন্ট করা, কোন গবেষণায় সহায়তা করা, অথবা ছোটখাটো খাবারের হোটেল বা খাবার সাপ্লাই দেওয়া ইত্যাদি কাজ হতে পারে আপনার ভবিষ্যতের বড় ব্যবসার জন্য প্রাথমিক পদক্ষেপ।
ভ্রাম্যমান বিক্রয় কর্মী
এখন দিন বদলেছে। ছাত্ররা অনেকে এখন বিভিন্ন কোম্পানির বিক্রয় কর্মী হিসেবে কাজ করছে। আপনি কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে খন্ডকালীন বিক্রয় কর্মী হিসেবে কাজ করতে পারেন। যেখানে লোকের সমাগম বেশি সেখানে ভ্রাম্যমান দোকানগুলো গড়ে ওঠে।
ছোটখাটো কিছু পণ্য যেমন-হারপিক, ডিটারজেন্ট,হ্যান্ডয়াশ,ভিম ইত্যাদি পন্য সহজেই মানুষ কেনে।আবার ব্যবসার পলিসিতে এইগুলোতে বিশেষ ছাড় থাকে বিধায় মানুষ সহজে এইসব পন্য কিনতে উৎসাহিত হয়। ছাত্র জীবনে আয় করার জন্য এই সহজ পেশাটি আপনি বেছে নিতে পারেন।
গবাদি পশু পাখির খামার
আপনি যদি গ্রামে লেখাপড়া করছেন তাহলে কিছু টাকা ইনভেস্ট করে গবাদি পশু পাখির খামার করতে পারেন। তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে,তা হল নিজে খামার পরিচালনা করতে হবে। খামার করে অন্যের উপর ছেড়ে নিশ্চিন্ত হওয়ার কোন কারন নেই। ঠিক মতো না দেখভাল করলে ইনভেস্ট করা টাকা সব মাটি।
আর একবার যদি এই খাত থেকে সফল হতে পারেন তাহলে আপনার সহপাঠীদের থেকে আপনি অনেকদূর এগিয়ে থাকলেন।অন্যরা যখন কর্ম সন্ধানে নামবে আপনি তখন প্রতিষ্ঠিত।আপনি একসাথে বেশি না করে কম টাকা ইনভেস্ট করবেন। ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার জন্য খামার খুবই লাভজনক।
বিউটি পার্লার করে আয়মানুষ সুন্দরের পূজারী। সবাই সুন্দর হতে চাই। লেডিস বা জেন্স দুই ধরনের পার্লার করতে পারেন। শহরে কিংবা গ্রামে সব জায়গাতেই বিউটি পার্লারের চাহিদা রয়েছে। শহরে যারা পড়তে আসেন বিশেষ করে মহিলাদের জন্য বিউটি পার্লারে খন্ডকালিন কাজের সুযোগ রয়েছে।
সেই সাথে দক্ষতা অর্জন করলে নিজেই পার্লার খুলতে পারেন।আপনার প্রতিষ্ঠানে আরও ছাত্রছাত্রীদের কর্মসংস্থান এর ব্যবস্থা করতে পারেন। বর্তমানে পার্লারের ব্যবসা খুব ভাল আয়ের উৎস। সুযোগটা নিজে নিয়ে অন্যকেও এই পেশার মাধ্যমে সাবলম্বি হতে সহায়তা করতে পারেন।
সেলুন দিয়ে আয়
ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার অনেক উপায় রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো সেলুন খুলে আয়। গ্রামে বা শহরে সব জায়গাতেই সেলুনের প্রয়োজন রয়েছে। পড়ার পাশাপাশি যদি কয়েকজন মিলে খুব অল্প কিছু টাকা ইনভেস্ট করে একটা সেলুন খুলতে পারেন তবে এর থেকে যা আয় হবে তা দিয়েই আপনার দৈনন্দিন খরচ চালিয়ে নিতে পারবেন।
সেলুন ব্যবসার সব থেকে বড় সুবিধা হলো এই ব্যবসাটি সারা বছর করতে পারেন। এমনকি এই দোকানটি ভ্রাম্যমাণও হতে পারে। যেখানে,যখন প্রয়োজন সেখানেই আপনার দোকানটি চালু করে আবার প্রয়োজনে গুটিয়ে দিতে পারেন।
সেলুনে এখন শুধু দাড়িগোঁফ শেভ করেনা,সাথে চুলের জন্য বিভিন্ন হেয়ার স্টাইল,মাথা,মুখ ম্যাসাজের পাশাপাশি পুরা শরীর ম্যাসাজ করা হয়। তবে অবশ্যয় গ্রাহকের চাহিদার প্রেক্ষিতে।এমকি চুলদাড়িতে কালার করতে চাইলেও সেবাটি আপনি দিতে পারেন।
রাইড শেয়ার করতে পারেন
আপনি যদি ঢাকা শহরে থেকে পড়াশনা করছেন তবে ছাত্র জীবনে আয় করার জন্য রাইড শেয়ারকে বেছে নিতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন হবে নিজের একটা বাইক বা মোটরসাইকেল। ঢাকায় বেশ জনপ্রিয় এটি। কারন ঢাকায় প্রচন্ড যানজটে নাকাল শহরবাসী। এই যানজটকে পাশ কাটিয়ে চলার জন্য রাইড শেয়ারিং একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম।
আপনি যদি ট্রাফিক নিয়মগুলো সঠিক ভাবে জেনে মানার মন-মানুসিকতা তৈরি করতে পারেন,আপনার যদি লাইসেন্স থাকে তবে আপনি নির্দ্বিধায় রাইড শেয়ার করে ভালো আয় করতে পারেন।ঢাকার বেশিরভাগ রাইড শেয়ারকারিদের মধ্যে ছাত্রের সংখ্যায় বেশি।
টুরিস্ট গাইড হয়ে আয়
আমাদের দেশে টুরিস্ট গাইডের বেশ অভাব রয়েছে। আমাদের শিক্ষার হার বেশি হলেও এখানে বিদেশী বা ভিনদেশি ভাষা জানা লোক খুব কম।আর যারা ভিনদেশি ভাষা জানে তারা আর নিজ দেশে থাকেনা,বিদেশে পাড়ি জমায়। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে ।
আপনি যদি ছাত্র জীবনেই ভালো আয় করতে চান তবে ভিনদেশি যেকোনো ভাষা শিখেন।আপনাকে ক্লাইন্ট খুঁজতে হবেনা,ক্লাইন্ট আপনাকে খুঁজে নিবে।এছাড়াও আপনার উচিত হবে দেশের দর্শনীয় স্থান গুলোর বিষয়ে ভালো ধারনা রাখা।
টুরিস্ট গাইডের কাজ হলো সব বিষয়ে তাদের গাইড করা। কারন বিদেশিরা কোন বিষয়ে জানেনা।আপনার কাছ থেকেই তারা জানবে। সেক্ষেত্রে আপনি যা জানাবেন তথ্য যেন সঠিক থাকে সে ব্যাপারে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।
মৌসুমি ফলের ব্যবসা করে আয়
যারা চোখ কান খোলা রাখে তাদের জন্য ছাত্র জীবনে টাকা আয় করা কোন বিষয় না। মনে করেন আপনার কোন টাকা নাই, দোকান নাই। তাহলে কি আপনি আয় করবেন না? সব ভুলে যান।রিল্যাক্স থাকেন।আপনার জন্য উপায় আছে। ধরেন আপনার বাড়িতে ফলের গাছ আছে। প্রচুর ফলন হয়েছে।
বাড়িতে খেয়েও অনেক রয়ে গেছে।এগুলো কি করবেন? আপনি চাইলে ফল গুলো হাটে বা বাজারে বিক্রি করতে পারেন। বাজারে নিয়ে যেতে না চাইলে আপনার হাতে যে ফোনটি আছে তা ব্যবহার করুন। ফেসবুকে শেয়ার করুন দেখবেন আপনি অর্ডার পেতে শুরু করবেন।
ব্যাস,তাদের নাম ঠিকানা নিয়ে কুরিয়ারে পাঠিয়ে দিয়ে পেমেন্ট নিন। আসলে আমরা যতটা কঠিন ভাবি ততটা কঠিন সবসময় নয়। হতে পারে সেটা বিভিন্ন ফল। যেমন-আমের সময় রাজশাহী থেকে সারা দেশে এভাবে আম পাঠানো হয়। আবার অন্য এলাকা থেকে অন্য ফল।
মৌসুমি ফুলের ব্যবসা
সবাই ফুল ভালোবাসলেও ফুলের চাষ করতে সবাই পারেনা।আবার বেশিরভাগ ফুল শীতকালে পাওয়া যায়।আবার সেটা এলাকাভেদে তারতম্য হতে পারে। আপনি ছাত্র জীবনে মৌসুমি ফুলের ব্যবসা করতে পারেন।সারা বছর কোন না কোন অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। অনুষ্ঠান মানেই ফুলের চাহিদা থাকবে।
আপনি এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেন। ফুল চাষিদের থেকে ফুল সংগ্রহ করে অনুষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই দিতে পারেন। এই উৎস থেকে ভাল আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুনঃফেসবুক থেকে আয় করার সেরা ১২ টি উপায়
ছাত্র জীবনে চা বিক্রি করে আয়
ধরে নিলাম আপনি খুব গরিব।নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। তাহলে কি আপনি পড়াশোনা করবেন না? কিছু টাকা যোগাড় করুন,একটা ফ্লাক্স কিনুন।অথবা ফ্লাক্সটাও কারও থেকে ধার নিন। চা বানিয়ে নিন। এবারে বেরিয়ে পড়ুন আপনার ক্যাম্পাসে। যেখানে লোকজনের চলাচল বেশি সেখানে কেউ না কেউ আপনার থেকে চা খেতে চাইবে।
যদি সম্ভব হয় তবে চায়ের পাশাপাশি বিড়ি,সিগারেট ইত্যাদি ছোট আইটেম রাখতে পারেন। সাহস করে শুধু শুরু করুন পথ আপনাকে এগিয়ে নিবে। পাছে লোকে কিছু বলে ভেবে বসে থাকবেন না। সবাই বলবে,কিন্তু করতে হবে নিজেকেই।
ঝাল মুড়ি বিক্রি করে আয়
সারাদিন ক্লাস,পড়াশোনা করে বিকেলের কিছু সময় বরাদ্দ রাখুন আয় করার জন্য। শুরু করুন ঝাল মুড়ি বিক্রির কাজ। মুখরোচক এই খাবার সকলের কাছে বেশ জনপ্রিয়। খুব অল্প পূজিতে এই কাজটি করে অনেকে গোটা সংসার চালায়। আপনি তো একজন মানুশ।বেশ ভালোভাবেই নিজের খরচ চালাতে পারবেন।
বাদাম সহ অন্যান্য পন্য বিক্রি
ঝাল মুড়ির পাশাপাশি বাদাম,বুট,মটর ইত্যাদি খাবারও সাথে বিক্রি করে আয় করতে পারেন। এতে কিছুটা হলেও আপনার কাজে লাগাবে। তাছাড়া শশা,পেয়ারা এগুলো বিক্রি করেও আপনার চাহিদা কিছুটা পূরণ করতে পারবেন।
ফুচকা,বার্গার,চটপটি,হালিম বিক্রি করে আয়
শহরের অলিতে,গলিতে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বিকাল থেকে শুরু হয় ফুচকা, বার্গার,চটপটি, হালিম,শিক ইত্যাদির ভ্রাম্যমান দোকান।কয়েকজন বন্ধু মিলে শুরু করতে পারেন এই পন্যগুলো বিক্রি। মানুষ প্রিয়জনদের নিয়ে আপনার দোকানে তাদের পছন্দের আইটেম খেতে আসবে।
অল্প পূঁজিতে কম পরিসরে চেস্টা করবেন ভালো সেবা দিতে। ধীরে ধীরে কাস্টমার বাড়বে।পন্যের গুণগত মান ভালো হলে অবশ্যই আপনি ভালো আয় করতে পারেন।
ক্যাম্পাসে খাতা,কলম বিক্রি করতে পারেন
ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার সহজ উপায় হতে পারে ক্যাম্পাসের ভিতরে বিভিন্ন ধরনের খাতা,কলম বিক্রি।ছাত্ররা খাতা,কলম কিনবেই। আপনি যদি বিজ্ঞাপন দিতে পারেন বা আপনার ক্লাসে জানাতে পারেন আপনার কাছে এই পন্যগুলো পাওয়া যাবে তবে তারা দোকানে না গিয়ে আপনার থেকেই পন্য কিনবে।আপনি পাইকারি কিনে সেগুলো খুচরা তে বিক্রি করে ভালো আয় করতে পারেন।
কোচিং বা প্রাইভেট পড়িয়ে আয়
ছাত্র জীবনে কম বেশি সবাই ছাত্র পড়িয়ে টাকা ইনকাম করে থাকে। আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ হলে সেই বিষয়ে নিচের ক্লাসের ছাত্রদের পড়াতে পারেন। সেটা হোক বাড়িতে গিয়ে অথবা কোন কোচিং সেন্টারে। এই কাজে আপনার কোন টাকা ইনভেস্ট করতে হবেনা।শুধু ধৈর্য থাকতে হবে। অনেকে সারা জীবন প্রাইভেট পড়িয়েই সংসার চালায়।
কল সেন্টারে চাকুরি করে আয়
আপনি যদি ভালো কথা বলতে পারেন,উচ্চারন পরিস্কার হয়,কাস্টমারদের সাথে ভালো ব্যবহার করার মতো যোগ্যতা থাকে তাহলে বিভিন্ন কোম্পানির কল সেন্টারে পার্ট টাইম চাকুরি করতে পারেন। কল সেন্টার গুলোতে প্রচুর কাজের অফার থাকে। তাদের নিয়ম মেনে চলতে পারলে এখান থেকে বেশ ভালো আয়ের সুযোগ রয়েছে।
কোম্পানির এজেন্ট
বিভিন্ন কোম্পানি তাদের কোম্পানির প্রচারের জন্য এজেন্ট খুঁজে। ছাত্র জীবনে বিনা পয়সায় আয় করার জন্য এই অফার গ্রহন করতে পারেন। তারা আপনাকে নিজেরায় ট্রেনিং দিয়ে সব বুঝিয়ে দিবে। সেজন্য আপনাকে স্মার্ট হতে হবে।কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে।পরিস্থিতি মানিয়ে চলতে হবে।
এভাবে কয়েকটি কোম্পানির এজেন্ট হতে পারলে আপনার লেখাপড়ার খরচ নিয়ে টেনশন করতে হবেনা। ভবিষ্যতে এই কোম্পানি গুলোতে একজন ফুল টাইম কর্মী হিসেবে চাকুরি পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
স্টক বিজনেস
ছাত্র জীবনে বন্ধুদের সাথে বন্ডিং ভালো থাকে। এই সুযোগে কয়েকজন বন্ধু মিলে স্টক বিজনেস করতে পারেন। সেটা হতে পারে ধান,গম,আলু, পেঁয়াজ ইত্যাদি। স্টক বিজনেস করে কোটিপটি হয়েছে এমন নজির এখন ভুরি ভুরি। সবাই যদি সমভাবাপন্ন হয়, পরিশ্রম করার মন মানসিকতা থাকে তাহলে একটা উদ্যোগ নিতেই পারেন।
কন্টেন্ট রাইটি করে আয়
আপনার লেখালেখি করতে ভাল লাগলে অনলাইনে বা অফলাইনে বিভিন্ন বিষয়ে লিখতে পারেন।অফলাইনে পেপার,পত্রিকায় লিখতে পারে। যদি অনলাইনের কথা চিন্তা করেন তবে একটা ওয়েব সাইট খুলে ব্লগে লিখতে পারেন। গোটা পৃথিবীর মানুষ আপনার লেখা পড়বে। বর্তমানে কন্টেন্ট রাইটিং করে লাখ লাখ টাকা আয় করা সম্ভব।
আপনার উচিত হবে এই বিষয়ে একজন দক্ষ প্রশিক্ষকের কাছে ভালভাবে প্রশিক্ষন নিয়ে তার সহযোগিতায় নিজের একটা ওয়েব সাইড খুলে লেখালেখি শুরু করা। কাজ করতে করতে আপনি দক্ষ হয়ে উঠবেন। ধীরে ধীরে আপনার আয় বাড়তে থাকবে। আয় শুরু হলে আপনাকে আর পিছনে ফিরতে হবেনা। তখন অন্যদের আপনি প্রশিক্ষন দিয়ে আয়ের সুযোগ করে দিতে পারেন।
ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসাছাত্র জীবনে টাকা আয় করার জন্য ফ্লেক্সিলোডের দোকান দিতে পারেন। বাংলাদেশের মানুষ গরিব হতে পারে কিন্তু বেশ শৌখিন। ভাত একবেলা না খাইলেও চলবে কিন্তু মোবাইলে টাকা থাকতেই হবে। তাই প্রত্যেক জায়গায় ফ্লেক্সিলোডের দোকান গরে উঠেছে।
এর সুবিধা হলো নির্দিষ্ট জায়গা না থাকলেও সমস্যা নাই। আপনি দাঁড়িয়ে থেকেও এই কাজটি করতে পারেন। কোম্পানি গুলো আপনাকে তাদের বিধি মোতাবেক কমিশন প্রদান করবে।সব অনলাইনে।বিধায় পেমেন্ট না পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। আপনি আজীবন এই কাজটি করে যেতে পারেন।
স্কিল ডেভেলপ করে আয়
ছাত্র জীবনে টাকা আয় করার জন্য আপনাকে যে কোন বিষয়ে স্কিল ডেভেলপ করতে হবে। যার জন্য প্রশিক্ষনের বিকল্প নাই। আপনার যদি স্কিল থাকে তবে সে বিষয়ে সহজেই সফল হতে পারবেন। ভালো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রশিক্ষন নিয়ে দক্ষতা অর্জন করুন। এখন অনলাইনের মাধ্যমে টাকা আয় করা বেশ আকর্ষণীয় মাধ্যম।
ইউটিউব,ফেসবুক,ইন্সট্রাগ্রামের মাধ্যমে আয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে। আপনিও সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে জীবনে সফলতার মুখ দেখতে পারেন। চাই ইচ্ছাশক্তি আর কাজের ধৈর্য।
শেষকথা
আমাদের দেশে বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি। শিক্ষিত জনগোষ্ঠী বড় চাকুরি বা সরকারি চাকুরির আশায় না থেকে, অল্প পুঁজিতে বা বিনা পুঁজিতে যে সমস্ত কাজ রয়েছে সেগুলো দিয়েই শুরু করা উচিত। আমার এই আলোচনার মধ্য দিয়ে চেস্টা করেছি একজন ছাত্র কিভাবে তার পড়ার খরচ বহন করতে পারে বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে।
সত্যি বলতে এই দেশের শিক্ষিত তরুন সমাজ বেকার থাকে আয়ের উপায়গুলো না জানার জন্য। আমাদের আশেপাশে অনেক উৎস রয়েছে আয়ের। কিন্তু অসচেতনতায় আমরা সেগুলো এড়িয়ে চলি। ফলে বেকার জীবন যাপন করতে হয়। আমার এই আলোচনাটি থেকে আপনি যদি একটুখানি উপকৃত হয়ে থাকেন তবেই আমি সার্থক।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url