ইউটিউব থেকে আয় করার ২০ পদ্ধতি।শর্টস ভিডিও থেকে আয়।
ফেসবুক থেকে আয় করার সেরা ১২টি উপায়ইউটিউব থেকে আয় করার ২০ পদ্ধতির সম্পর্কে আমরা জানব।বর্তমান যুগ অনলাইনের। অনলাইনের কল্যাণে আমরা বিভিন্ন উপায়ে আয় করে থাকি। অনলাইনে যে ফিচারগুলো রয়েছে তার মধ্যে খুবই জনপ্রিয় একটি হলো ইউটিউব চ্যানেল।
ইউটিউব থেকে বিভিন্ন উপায়ে আমরা আয় করতে সক্ষম হব,কিছু নিয়ম মেনে। বর্তমান বিশ্বে খুব সহজ উপায়ে ইউটিউব থেকে আমরা আমাদের আয় বাড়াতে পারি। আসুন জেনে নিই কিভাবে ইউটিউব থেকে আমরা বিভিন্ন উপায়ে আয় কতে পারি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ
ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে
আপনি ইউটিউব থেকে আয় করতে চান কিন্তু এখনও চ্যানেল খুলেননি? তাহলে প্রথমেই আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে। সেটি যেকোনো নামেই হতে পারে। হোক সেটি নিজের নামে অথবা আপনার পছন্দের বিষয় সংশ্লিষ্ট যেকোন নাম।
উপযুক্ত বিষয় নির্বাচন
ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য প্রথমেই আপনাকে উপযুক্ত বিষয় নির্বাচন করতে হবে। আপনি কোন বিষয় নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী তা সিদ্ধান্ত নিন। আপনি যে বিষয়ে দক্ষ এবং যে বিষয়ে আপনার আগ্রহ রয়েছে এমন বিষয়কে নির্বাচন করুন। একাধিক বিষয়ে একসাথে কাজ না করাই ভালো।
কি ওয়ার্ড থাকতে হবে
কোন ভিডিও আপলোড করার সময় উপযুক্ত এবং আকর্ষণীয় একটি কি ওয়ার্ড দিতে হবে। প্রথমে মানুষ কি ওয়ার্ডের দিকে খেয়াল করে। উপযুক্ত কি ওয়ার্ড থাকলে সহজেই মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করা যায়।এর জন্য প্রয়োজন সময় উপযোগী কি ওয়ার্ড নির্বাচন করা।
ভালো ডিভাইস প্রয়োজন
ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য আপনাকে অবশ্যই ভালো ডিভাইস রাখতে হবে।সেটা হতে পারে ক্যামেরা, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা,ভালো মানের স্মার্ট ফোন। কারন আপনার ভিডিও কোয়ালিটি যদি ভাল না হয় তবে যতো ভাল কনটেন কেন সেটা কেউ দেখবেনা। তাই আপনার সাধ্যমতো ভালো ডিভাইস অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে
ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার ২০ পদ্ধতির মধ্যে একটি হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। এই পদ্ধতির মাধ্যমে আপনি অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের পন্যের বিজ্ঞাপন আপনার চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচার করতে পারেন। এতে করে আপনার চ্যানেলের মাধ্যমে যে আয় হবে তার নির্দিষ্ট অংশ আপনি পাবেন কমিশন হিসেবে।
বিজ্ঞাপন প্রচার করে
আপনার ভিডিও দেখে মানুষ সন্তুষ্ট হলে আপনার চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করবে। এভাবে কমপক্ষে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ হলে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ আপনার চ্যানেলটি বিজ্ঞাপন প্রচার করার উপযুক্ত মনে করবে। যখন বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু হয় তখন থেকে আপনার ইনকামও আরম্ভ হয়। এই উপায়ে বেশ ভাল আয় করা সম্ভব।
স্পন্সরশিপের মাধ্যমে আয়
আপনার চ্যানেল যখন ভাল সাবস্ক্রাইবার পাবে তখন অনেক কোম্পানি আপনার চ্যানেলটিকে স্পন্সর করতে চাইবে।কারন আপনার চ্যানেলে এখন অনেক দর্শক আকর্ষণ করার ক্ষমতা রাখে। বহু মানুষ দেখার কারনে তাদের পন্যের বিজ্ঞাপনও অনেক লোকের নজরে পড়বে,এই সুযোগটাই সবাই নিতে চাই। এ থেকে আপনি আয় করতে পারবেন।
চ্যানেলে ট্রাফিক নিতে হবে
ইউটিউব সহ অন্য যে কোন সোশ্যাল মিডিয়াতে আয় করার জন্য চ্যানেলে বেশি বেশি ট্রাফিক নিতে হবে। তবে এমনি এমনি তো ট্রাফিক পাওয়া যায়না। এইজন্য ট্রাফিক কিভাবে চ্যানেলে আনতে হবে সেই নিয়ম গুলো জেনে ট্রাফিকের ব্যবস্থা করা যায়।
মনিটাইজেশন অন করতে হবে
ইউটিউব থেকে আয় করার ২০পদ্ধতির মধ্যে একটি হলো বিভিন্ন অ্যাড দেখানোর মাধ্যমে আয়। সেজন্য আপনার চ্যানেলটিকে মনিটাইজেশন করে নিতে হবে। ইউটিউব স্টুডিও থেকে মনিটাইজেশন বিভাগে গিয়ে চ্যানেলে অ্যাড দেখানো সিলেক্ট করবেন। ড্যাশবোর্ডে ইনকাম দেখাবে।
ইউটিউব প্রিমিয়াম থেকে আয়
চ্যানেল থেকে আয় শুরু হলে ইউটিউব প্রিমিয়াম এ সাইন আপ করতে হবে। আপনার চ্যানেল যখন রিচ হবে তখন এখানে সাবস্ক্রাইবার চাইলে বেশি খরচ করে অ্যাড ছাড়াই চ্যানেলের ভিডিও দেখতে পাবেন। এটা সাবস্ক্রাইবার থেকে রোজগারের দ্বিতীয় পথ, ইউটিউব প্রিমিয়াম।
মারচেন্ডাইস সেলস
আপনার চ্যানেলের মাধ্যমে নিজের বিভিন্ন পন্য দর্শকদের কাছে বিক্রি করা যায়। নিজের তৈরি লোগো,চাবির রিং,টি শার্ট,ব্যাগ ইত্যাদি জিনিষ ফলোয়াররা আগ্রহের সাথে কিনে থাকে। এ থেকেও আপনি ভালো আয় করতে পারেন। ভিডিওর নিচে মারচেন্ডাইস সেলস রাখতে পারেন।
ফ্যান ফান্ডিং থেকে আয়
ইউটিউবে ফ্যান ফান্ডিং করা যায়। এখানে আপনি আপনার দর্শকদের কাছ থেকে Patreon,Tipee,Buy me a coffee র মতো ওয়েব সাইড থেকে আয় করতে পারেন। ইউটিউব থেকে আয় করার ২০টি পদ্ধতির মধ্যে এটি একটি কার্যকর পদ্ধতি।
ভিডিও লাইসেন্সিং
আপনার চ্যানেলের ভাইরাল ভিডিওগুলো অন্য মিডিয়া স্ট্রিম করার জন্য আপনাকে টাকা দেবে। এর জন্য আপনার ভাইরাল ভিডিও গুলো আপনাকে লাইসেন্স করে নিতে হবে।যার মাধ্যমে কনটেন্টগুলো অন্যদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। এতে করে আপনার চ্যানেলের ভিডিও অন্যরা ব্যবহার করলে আপনাকে টাকা দিবে। এ থেকেও আপনি ভালো ইনকাম করতে পারেন।
চ্যানেল মেম্বারশিপ
ইউটিউব থেকে আয় করার আরেকটি পদ্ধতি হলো চ্যানেলের মেম্বারশিপ। এই পদ্ধতি কাজে লাগাতে হলে আপনার চ্যানেলে মেম্বারশিপ ফিচারটি চালু করতে হবে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে চ্যানেলের মেম্বারগন অতিরিক্ত কনটেন্ট পাবে।
আরও পড়ুনঃনটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত
চ্যাট পেমেন্ট
ইউটিউব থেকে আয় করার ২০টি পদ্ধতির মধ্যে চ্যাট পেমেন্ট একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে সুপার চ্যাটের মাধ্যমে দর্শকদের থেকে ভালো আয় করা যায়। যে সকল ইউটিউবাররা পার্টনার প্রোগ্রামের সাথে যুক্ত থাকেন তাদের চ্যানেলে এক ধরনের উজ্জ্বল রং যুক্ত বার্তা প্রদর্শিত হয়। এই বার্তাটি দর্শক নির্দিষ্ট মূল্যে ইউটিউব থেকে কিনে নিয়ে থাকে।
বিভিন্ন ইভেন্ট আয়োজন করে
ইউটিউবে বিভিন্ন ইভেন্ট আয়জন করে আপনার চ্যানেল টাকা আয় করতে পারে। এতে আরও একাধিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিতে পারে। এর মাধ্যমে আপনার চ্যানেলটি আরও অনেকের কাছে পরিচিত হয়ে উঠে। যা আপনার আয়ের পথ সুগম করে।
ডিজিটাল পন্য বিক্রি করে আয়
আপনি ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করছেন অথচ ডিজিটাল পন্য থাকবেনা তাই কি হয়? ইউটিউব থেকে আয় করার ২০টি পদ্ধতির মধ্যে একটি হলো ডিজিটাল পন্য বিক্রির মাধ্যমে আয়। এখান থেকে আপনি বিভিন্ন ডিজিটাল প্রোডাক্ট যেমন-ই-বুক, টিউটোরিয়াল ইত্যাদি বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
অনলাইন কোচিং
মানুষ ঘরে বসে বিভিন্ন বিষয় শিখতে চাই। এই জন্য অনেকে অনলাইনে কোচিং করে থাকে। আপনার যদি কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা থাকে তাহলে আপনিও ঐ বিষয়ে অনলাইনে কোচিং ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারেন। সেটা পৃথিবীর যে কোন প্রান্ত থেকেই অংশ নেয়া যায়। বর্তমানে অনলাইন কোচিং থেকে খুব ভালো আয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
শর্টস ভিডিও থেকে আয়
ইউটিউবে আমরা হরহামেশায় শর্টস ভিডিও দেখতে পায়। ১ মিনিটের কম সময়ের ভিডিওকে শর্টস ভিডিও বলে। অল্প কথায়,কম পরিসরে ভিডিও হলেও এর প্রভাব অনেক। সহজে বোধগম্য হয়। অনেক্ষন এর প্রভাব স্থায়ী হয়।তাই দর্শক এই ধরনের ভিডিও বেশি দেখতে চায়। তাই নিজের চ্যানেলে শর্ট ভিডিও বেশি রাখা উচিত। এতে দর্শক বেশি পাওয়া যাবে।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার
আপনি ভালো উপস্থাপক হলে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের দায়িত্ত পালন করতে পারেন। অন্য একাধিক কোম্পানি তাদের কোন পন্যের জন্য আপনাকে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ দিতে পারে। এর মাধ্যমেও আপনি খুব ভাল আয় করতে পারেন।ইউটিউব থেকে আয় করার ২০টি পদ্ধতির মধ্যে এই পদ্ধতি হতে পারে ভালো উপায়।
শর্টস ভিডিও থেকে আয়ঃ
বর্তমানে শর্টস ভিডিও থেকে আয় করা অনেক সহজ হয়ে গেছে। ইউটিউবে প্রচুর শর্টস ভিডিও দেখা যায়। মানুষের ধৈর্য অনেক কমে গেছে। মানুষ এখন অনেক ব্যস্ত।তাই কম দেখাতে অনেক বলার এক টেকনিক হলো শর্টস ভিডিও। এই ভিডিও ১মিনিটের কম সময়ের হয়ে থাকে। এর জন্য প্রচুর হোম ওয়ার্ক করতে হয়। কারন আপনি যা বোঝাতে চান তা এই সময়ের মধ্যেই আপনাকে বোঝাতে হবে। এর জন্য কতোগুলো বিষয় জানতে হবে।যেমনঃ
প্রথমত আপনাকে একটি চ্যানেল খুলতে হবে।
কি নিয়ে ভিডিও হবে তার স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে হবে।
ভিডিও তৈরি করতে হবে।
মোবাইল দিয়ে ভিডিও করলে সেটা লম্বালম্বি ধরতে হবে।
মাইক্রোফোন মোবাইল বা ক্যামেরার সাথে কানেক্ট থাকতে হবে।
ইনডোর শুটিং করলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকতে হবে।
এরপর ভিডিও এডিটিং করতে হবে।
ভিডিওর সাথে মিলিয়ে স্ক্রিপ্ট তৈরি হয়ে গেলে যা লিখেছেন তা ভয়েস রেকর্ড করতে হবে।
তারপর এর মধ্যে ভিডিও ফুটেজ দিতে হবে।
সব কিছু ঠিক মতো হয়ে গেলে ভিডিও আপলোড করতে হবে।
শর্টস ভিডিওর সুবিধাঃ
এর ভিউ বেশি।
টিকটক,ফেসবুক এবং ইউটিউব এই তিন মাধ্যমেই এই ফিচারটি ব্যবহার করা যায়।
সহজেই কম সময়ে আপলোড করা যায়।
কম কথাতে অনেক বলা হয়ে যায়।
সহজেই অন্যদের কাছে পৌঁছানো যায়।
শেষ কথাঃ
পরিশেষে বলা যায় যে, বর্তমানে ইউটিবে দর্শক অনেক। আমরা অনেক কিছু সহজে কম খরচে পেতে চাই। এই সব সুবিধা আমরা পেতে পারি ইউটিউব থেকে। এমনকি অর্থনৈতিক ভাবেও আমরা এই খাত থেকে সফলতা অর্জন করতে পারি। বেশ ভালো আয়ের উৎস হতে পারে ইউটিউব চেনেল। তাই আসুন অলস বসে না থেকে কোন স্কিল শিখে ইউটিউব থেকে আয় করি।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url