OrdinaryITPostAd

নটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত।নটরডেম কলেজের পড়ার ২০টি কারণ ।

সাদা ফুলের গন্ধ বেশি হয়।নটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত।এই প্রশ্নের উত্তরে বলতে পারি, বাংলাদেশের অন্যান্য কলেজের থেকে এই কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থায় কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।  এই কলেজটি খ্রিস্টান মিশনারী দ্বারা পরিচালিত । দেশের মেধাবী ছাত্রদের জন্য সেরা পছন্দের কলেজ। 


 

নটরডেম কলেজ দেশ সেরা কলেজ। শুধু নামে নয়, তার বাস্তব প্রমাণ রয়েছে সারা দেশে। দেশের যে প্রান্তেই যান না কেন, হোক সেটা যে কোন সেক্টরে, কোন না কোন ডেমিয়েনকে  ঠিকই খুঁজে পাবেন। ডেমিয়েনের রাজত্ব দেশের সব জায়গায়।

পোস্ট সুচিপত্রঃ

নটরডেম কলেজের অবস্থান

বর্তমানে নটরডেম কলেজ ঢাকার রেলওয়ে স্টেশনের সন্নিকটে, মতিঝিলের আরামবাগে অবস্থিত। এটি রোমান ক্যাথলিকদের পবিত্র ক্রুশ সংঘের যাজকদের দ্বারা পরিচালিত। প্রথম থেকে এই কলেজটির অবস্থান এখানে ছিলনা।

ভারত বিভাজনের পর কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ব পাকিস্তান সরকারের আমন্ত্রণে আর্চ বিশপ লরেন্স গ্রেনারের তৎপরতায়  পবিত্র ক্রুশ সংঘের সিদ্ধান্তে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায় ১৯৪৯ সালে ৩রা নভেম্বর ঢাকার লক্ষীবাজারে সেন্ট গ্রেগরিজ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিবর্তিত রূপ হিসেবে সেন্ট গ্রেগরিজ কলেজ প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৫৪ সনে এই কলেজটি আরামবাগে স্থানান্তরিত হয়।

কলেজের নামকরণ ও নীতিবাক্য 

খ্রিস্টধর্মের প্রবর্তক যীশু খ্রীষ্টের মা মাতা মেরির নামে কলেজটি উৎসর্গ করা হয়েছে। ফরাসি শব্দ "নোতর দাম" অর্থ আমাদের মহীয়সী নারী।

নীতিবাক্যঃ লাতিন ভাষায় কলেজের নীতিবাক্য-Diligite Lumen Sapientiae 

ইংরেজি ভাষায়- Love the light of wisdom

বাংলা ভাষায়- জ্ঞানের আলোকে ভালোবাসা

নটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত। কলেজের বিশেষত্বই বা কি ? আসুন জেনে রাখি নটরডেম কলেজে পড়ার ২০টি কারন। 

নৈতিকতা 

নটরডেম কলেজ খ্রিস্টান মিশনারিদের দ্বারা পরিচালিত। শুরু থেকেই এই কলেজটি নৈতিক আদর্শে গঠিত ও পরিচালিত। খ্রিস্টান পাদ্রীদের দ্বারা পরিচালিত হলেও এখানে সব ধর্মের ছাত্ররাই পড়াশোনা করতে পারে। এমনকি মুসলিম ছাত্রদের জন্য একটি মসজিদও রয়েছে।

 কলেজে মাসের একটি নির্দিষ্ট দিনে নৈতিক শিক্ষার উপরে একটি ক্লাস বরাদ্দ থাকে। এতে করে এই বয়সের ছেলেদের  নিজের সীমা লঙ্ঘনের যে প্রবণতা  কাজ করে ,এটি নৈতিক শিক্ষার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রন করে পরবর্তীতে তা শক্তিতে রূপান্তরের সুযোগ ঘটে। এই কলেজে সব ধর্মের ছেলেরা সমান অগ্রাধিকার পায়। এখানে কেউ কাউকে ধর্ম জিজ্ঞেস না করে পড়া জিজ্ঞেস করে। । 

আরও পড়ুনঃ মানব জীবনে দূর্বা ঘাসের অবদান

২।দেশব্যাপী নেটওয়ার্ক

দেশের প্রত্যেকটি জেলা থেকেই ছাত্ররা আসে এখানে পড়তে। দেশের আনাচে-কানাচে যত মেধাবী রয়েছে তাদের সিংহভাগ পাবেন এই কলেজে। এজন্যই নটরডেম কলেজের  নেটওয়ার্ক এত বিশাল ও মজবুত।দেশের যে প্রান্তেই যান না কেন সেখানেই কোন না কোন ডেমিয়ান খুঁজে পাবেনই।

এখানকার সহপাঠীরা সবাই সমান। সে কোটিপতির সন্তানই হোক কিংবা, আদিবাসী সংখ্যালঘু ও হতদরিদ্র  তাতে কারও মাথা ব্যথা নেই। এখানে নৈতিকতা ও মেধার বিকাশ ঘটানো হয়।  শুধু তাই নয় সরকারি বেসরকারি চাকুরি কিংবা ব্যবসা বাণিজ্য সব সেক্টরেই ডেমিয়েনদের আধিপত্য চোখে পড়ার মত। 

৩।সেরাদের সংস্পর্শ

সারা দেশ থেকে সব মেধাবী ছাত্ররা আসে ঢাকা নটরডেম কলেজে পড়তে। উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার জন্য এই কলেজে মেধাবীরা এসে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষায় ভালো করতে পারলেই মেলে এই কলেজে ভর্তির সুযোগ। দেশের অন্য কলেজগুলো যেখানে মাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতে কলেজ নির্বাচন করা হয়  নটরডেম কলেজ এদিক থেকে স্বতন্ত্র।

বাংলাদেশে চারটি কলেজ রয়েছে যারা পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে তার মধ্যে নটর ডেম কলেজও রয়েছে। যার ফলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় যারা ভাল ফলাফল করেছে তাদের মধ্য থেকে আবারও যাচাই বাছাই করে যোগ্য প্রার্থীদের তুলে আনা হয়।

এই সেরাদের সাথে থেকে একটু পেছনের ছাত্রটিও কেমন করে যেন প্রথম সারির হয়ে উঠে।কলেজের সাফল্য এখানেই।আবার দেখা যায় এক ছাত্র গণিত অলিম্পিয়াডে সেরা তো আরেকজন ফিজিক্সে।এভাবে পাশাপাশি চলতে চলতে একসময় তুলনামূলক দুর্বল ছাত্রটিও সেরা হয়ে ওঠে।

 আরও পড়ুনঃ ভালো তরমুজ চেনার উপায় কি

৪।দেশ সেরা শিক্ষক

অনেকে প্রশ্ন করে নটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত? তার একটি উত্তর হলো এই কলেজে দেশ সেরা শিক্ষক রয়েছেন।সারা দেশের কলেজগুলোতে যে বই পড়ানো হয়,অনেক বইয়ের লেখক এই নটরডেম কলেজের শিক্ষক। সেই প্রিয় স্যারদের কাছে সরাসরি পাঠ গ্রহন করতে কে না চায়। 

তাছাড়াও এই কলেজের শিক্ষক ছাত্রদের মাঝে যে আন্তরিকতা ও সহভাগিতা তৈরি হয়েছে তাতে শিক্ষক যেমন ছাত্রকে দিতে পারলে খুশি তেমনি ছাত্রও সর্বক্ষণ নিতে আগ্রহী। যারা অপেক্ষাকৃত দুর্বল তাদের আলাদাভাবে বোঝাতেও স্যাররা ক্লান্তি বোধ করেন না।


 

৫।মনোরম কলেজ ক্যাম্পাস

ঢাকা মহানগরীর ইট কাঠের  দালানকোঠার সংকীর্ণ জায়গায়, বসবাসের অনুপযুক্ত , লোকে লোকারণ্য ব্যস্ত শহরে, নিরিবিলি ও মনোরম পরিবেশের অপার সৌন্দর্যের এক খন্ড শান্তির খোঁজ মিলবে নটরডেম কলেজ ক্যাম্পাসে। আপনারাও সবান্ধবে আমত্রিত।এখানে ছাত্রদের জন্য রয়েছে সুবিশাল খেলার মাঠ। 

কলেজের হেরিংটন ভবনের সামনে নাম না জানা গাছের দিকে তাকিয়ে অনেকটা সময় অনায়াসে কাটিয়ে দেয়া যায়। সারা বছর ধরেই কোন না কোন ফুলের শোভা আপনাকে তৃপ্তি দিবে। মাঠের চারিপাশে গাছগুলো প্রচণ্ড রোদে ছায়া দেবে।মাতা মেরির সামনে একঝলক ক্যামেরার ঝলকানি না হলে যেন অসম্পূর্ণ মনে হয়। 

৬।কুইজ

নটরডেম কলেজে একবারে বড় সিলেবাসে পরীক্ষা না নিয়ে সারা বছর ধরে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন করে কুইজ অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়া শেষ করতে সমস্যা হয়না।একবার কুইজে খারাপ করলেও সেটা পরবর্তীতে উন্নতি করা সম্ভব। কুইজগুলো এমনভাবে সাজানো হয় যেন স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষার সময় ছাত্ররা অবলীলায় উতরে যেতে পারে।

 যেমন কুইজের শিটে নির্দিষ্ট পরিমাণে জায়গা রাখা থাকে। সেখানেই উত্তর লিখতে হয়। অনেক কম সময়ে বেশ বড় বড় সমস্যার সমাধান করতে হয়। প্রশ্নগুলো অনেক জটিল থাকে। প্রথমদিকে এইগুলো অনেক সমস্যা মনে হলেও শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে এতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। 

৭।ল্যাব

নটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত এর একটি কারন হতে পারে এখানকার ল্যাব।শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক ল্যাব ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হয়। নিজ হাতে প্র্যাক্টিকেল করে খাতায় লিখতে হয়। স্যারদের চোখে ঠিক না হওয়া পর্যন্ত সেটা চলমান থাকে।বার বার করার ফলে এক সময় তা আয়ত্তে চলে আসে। ভবিষ্যতে এর প্রভাব সুদূর প্রসারী। 

৮।ক্লাব কার্যক্রম

নটরডেম কলেজে অনেক ক্লাব  রয়েছে। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহনের সুযোগ রয়েছে।যা মেধা বিকাশে খুবই সহায়ক। যা বাস্তব জীবনে বেশ কাজে লাগে।এতে চিত্তবিনোদন হয়। ক্লাব গুলোর মাধ্যমে কেউ বিতর্ক  করবে আবার কেউবা বিজ্ঞান সম্পর্কে তার জ্ঞানকে প্রসারিত করবে।

পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিষয় নির্বাচন করতে বেগ পেতে হবেনা। অনেকে অজানাকে জানতে চায় তাদের জন্য রয়েছে এডভেঞ্চার ক্লাব।ক্লাবের সদস্যদের আউটডোর প্রোগ্রামের ব্যবস্থাও আছে। এইরকম আরও অনেক ক্লাব রয়েছে যার প্রতিটাই জীবিত। 

৯।ফেস্ট

এই কলেজের ক্লাবগুলো বিভিন্ন ফেস্ট বা মেলার ব্যবস্থা করে থাকে। সারা দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা এই ফেস্টগুলতে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্তঃ যোগাযোগ তৈরি হয়। 

নিজ প্রতিষ্ঠানে ফেস্ট আয়োজন করে ছাত্ররা দায়িত্ব নিতে শিখে। ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দানের গুণগুলো তার আয়ত্তে আসে।নটরডেম কলেজে পড়ার এটাও একটা কারন হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ মানুষ মাদকাসক্ত কেন হয় 

১০। সম্মান

অনেকে বলতে পারেন ,অনেক কলেজেই কম বেশি এইগুলো থাকে।তাহলে নটরডেম কলেজেই কেন পড়া উচিত। চলুন জানি- দেশের কলেজগুলো পর্যায়ক্রমে সাজালে প্রথম পজিশনে নাম দেখাবে নটরডেম কলেজের। কেমন লাগে বলেন তো? জানি এই অনুভূতি বোঝানো যাবেনা।

সব কিছুর উপরে সম্মান। আপনি গর্ব করে বলতে পারেন আমি দেশের সেরা কলেজে পড়ি। আমার সন্তান দেশ সেরা কলেজের ছাত্র। বিষয়টি ভাবতেই ভাল লাগে।শুধু তাই নয়  এই কলেজের ছাত্ররা রাস্তায় যাতায়াতের সময়ে  অন্যদের আকর্ষণ কেড়ে নেয়। সবাই কেমন সমীহের চোখে দেখে। 

১১।নিয়মে কঠোর

কলেজের শিক্ষকবৃন্দ যেমন আন্তরিক প্রয়োজনে ঠিক তার বিপরীত।এখানে সবাইকে নিয়ম মেনে  চলতে হয়। নিয়মের ব্যপারে কোন ছাড় নয়। যেমনঃসকাল ৮টায় কলেজের গেট বন্ধ হয়ে যায়। সকাল ৮টা মানে ঠিক ৮টা। সেটা ৭টা ৫৯ মিনিট যেমন নয় তেমনি ৮টা ১ মিনিটও নয়। 

নটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত নিশ্চয় উত্তর পেয়ে গেছেন। কলেজের ড্রেস পরা বাধ্যতামূলক। এখেত্রেও অনেক সুবিধা আছে। কারণ অনেক গরিব ছাত্র আছে যারা নিত্য নতুন পোশাক পরতে পারেনা।ফলে সবাই একরকম পোশাক পরে এতে টাকার সাশ্রয় হয়। 

তাছাড়াও কোন ছাত্র যদি কোন নিয়ম ভাঙে তখন তার অভিভাবক ডাকা হয় ।তাকে শর্ত সাপেক্ষে সুযোগ দেওয়া হয়। তবে না শোধরালে তাকে টিসি দিয়ে দেয়া হয়। 

১২।অসাম্প্রদায়িক

এই কলেজটি খ্রিস্টান মিশনারিদের দ্বারা পরিচালিত হওয়ার ফলে অসম্প্রদায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠেছে। এখানে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য উন্মুক্ত। অনেক গরিব, অসহায়,আদিবাসী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেমন আছে অন্যদিকে কোটিপতি ,নেতা ,চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ী দের সন্তানেরাও একইসাথে বসে লেখাপড়া করছে।

এই অসাম্প্রদায়িক পরিবেশে সন্তানকে সুশিক্ষার সুযোগ করে দিতে অভিভাবক হিসেবে আপনার উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তাহলে আমরা বুঝতে পারি যে আমার সন্তান কে কেন নটরডেম কলেজে পড়ান উচিত। তাছাড়াও এখানে খ্রিস্টানদের পাশাপাশি  অন্য ধর্মের  জন্যও প্রার্থনার জায়গা রয়েছে। এমনকি একটি মসজিদও রয়েছে।


 

১৩।রাজনীতি মুক্ত

নটরডেম কলেজ সম্পূর্ণ রাজনীতি মুক্ত। এখানে কোন রকমের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেয়া হয় না। এখানে রাজনৈতিক নেতাদের কোনো রকমের বাড়তি সুযোগ দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা। ছাত্ররা  পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করতে পারে। কোন রকমের ভয়-ভীতি ছাড়া। 

১৪।আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতি

নটরডেম কলেজে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছাত্ররা আসে পড়তে। ফলে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতির সমন্বয় ঘটে। বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী সম্পর্কে জ্ঞান  লাভ করা যায়। বিভিন্ন জাতির ভাষা ভিন্ন ভিন্ন। ইচ্ছে করলেই অন্য সম্প্রদায়ের ভাষা শেখার সুযোগ রয়েছে। ভিন্ন সংস্কৃতিতে একাত্ম হতে পারে।

১৫।নতুন বন্ধুত্ব তৈরি

দেশের আনাচে-কানাচে থেকে ছাত্ররা এখানে জ্ঞান অর্জন করতে আসে। তাদের মধ্যে নতুন নতুন বন্ধুত্ব সৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়। কারো কোন দুর্বলতাই অনেকের কাছে শক্তি হিসেবে ধরা দেয়। তাদের মধ্যে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগ স্থাপন হয়। ধনী গরিব সকলকেই আপন করে নেয়ার মন-মানসিকতা সৃষ্টি হয়। 

১৬।নিজ এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে

নটরডেম কলেজে পড়ার আরেকটি কারণ হলো সারা বাংলাদেশ থেকে এই কলেজে মেধাবীরা পড়তে আসে। আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ার কারণে খুব কম সংখ্যক ছাত্র এখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ লাভ করে। যার ফলশ্রুতিতে দেখা যায় কোন কোন এলাকা থেকে একজন বা  দুইজন মাত্র ছাত্র সুযোগ পেয়েছে।

 সে ক্ষেত্রেও তারা চেষ্টা করে নিজের অবস্থান থেকে যতটা ভালো করা যায়। কারণ তারা নিজেদের এলাকাকে রিপ্রেজেন্ট করে। এলাকার প্রতিনিধিত্ব করতে কে না চায়। নটরডেম কলেজে পড়ার এটা একটা কারণ। 

১৭।গার্ডিয়ান মিটিং

নটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত?কলেজে নিয়মিত গার্ডিয়ান মিটিং অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। ছাত্রদের যার যার সমস্যা নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হয়। সন্তানদের লেখাপড়ার অগ্রগতি সম্পর্কে অভিভাবকদের মাঝে  তুলে ধরা হয়। তাদের সন্তানদের  নিয়মিত খোঁজ রাখতে বাধ্য করা হয়। যেন সন্তান বিপথে না যায়।

১৮।সমৃদ্ধ লাইব্রেরী

নটরডেম কলেজে পড়ার আর একটি কারণ হতে পারে কলেজের সুবিশাল লাইব্রেরি। ক্লাসে পড়ানো বইগুলো ছাড়াও অনেক অনেক বই রয়েছে এখানে। ছাত্ররা চাইলেই এখান থেকে বই নিয়ে পড়তে পারে। সব ধরনের বই এখানে পাওয়া যায়।  

১৯।বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষায় সেরা সাফল্য অর্জন 

নটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত।এর সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য কারণ হল  বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষায়  দেশ সেরা সাফল্য। এই কলেজের  মেধাবীরা সব জায়গায় সব সেক্টর দখল করে রাখে। মনে হয় যেন বাপের জমিদারী। এই জমিদারীতে ভাগ বসানোর সুযোগ তারা কাউকে দিবেনা।

এর ধারাবাহিকতা চলছে বছরের পর বছর। এবং প্রতি বছর তারা নিজেদের সাফল্যকে আরও বাড়াতে বদ্ধপরিকর। যেন এটা তাদের নেশাতে পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রতি সেক্টরে তাদের জমিদারির চিহ্ন স্বরূপ তারা প্রায় অর্ধেক ।এর পরেও কি প্রশ্ন করার সুযোগ থাকে নটরডেম কলেজে কেন পড়া উচিত? 

এই সময় এসে বোঝা যায় এই দুই বছরের কলেজ জীবন তাদের কতোটা উপকারে এসেছে। সব কষ্ট নিমেশেই যেন খুশিতে পরিনত হয়। বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিক্যাল সহ শীর্ষ সব প্রতিষ্ঠানে ডেমিয়েনদের জয় জয়কার। এখানেই নিহিত রয়েছে নটরডেম কলেজের সফলতা। 

২০।কলেজ কেন্টিন 

কলেজের রয়েছে বিশাল ও টিপটপ ক্যান্টিন। এখানের শিঙ্গাড়ার জন্য ছাত্ররা পাগল। রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলে শিঙ্গাড়ার জন্য। তাছাড়া চা থেকে শুরু করে পিজা, বার্গার ,ফ্রাইড রাইস কি নেই এখানে।কন কিছুর জন্যই বাহিরে যাবার দরকার হয়না।   

 কিছু বিরল ঘটনা

নটরডেম কলেজের ছাত্রদের কলেজের পরিক্ষার রেজাল্ট নিতে একজন অভিভাবক সাথে আসা বাধ্যতামূলক। অভিভাবক ছাড়া কোনভাবেই ছাত্রের হাতে রেজাল্ট শিট দেওয়া হয়না। রেজাল্টের উপর ভিত্তি করে ছাত্রদের পজিশন উল্লেখ করা থাকে। এতে সুস্পষ্ট ভাবে ঐ ছাত্রের অবস্থান বোঝা যায়।

কলেজের ভিতরে থাকা কালীন অনেক নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়। নচেৎ জরিমানা সহ আরও কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে। যেমন ক্লাসের চেয়ার টেবিলে কোনরকম দাগ দেওয়া যাবেনা।এবং এটি মাঝে মাঝেই চেক করা হয়। এর মধ্যে যদি কারও চেয়ার টেবিলে কোনরকম দাগ দেখা যায় তাকে তৎক্ষণাৎ আর্থিক জরিমানা করা হয়। 

এমনকি এই কলেজের শক্ত গাইডেন্সের ফলে তাদের বাথরুম গুলোতেও কোনপ্রকার আঁকা আঁকি চোখে পড়বেনা।যা আমাদের দেশের জন্য বিরল ঘটনা। 

কুইজ বা অন্যান্য পরীক্ষার সময়ে দেখাদেখি করে লেখার কোন সুযোগ নেই।প্রয়াত প্রিন্সিপাল ফাঃবেঞ্জামিন কস্তা ছাত্রদের বলতেন -পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন না করে অনেস্টলি ফেল কর ।তোমাকে পাশ করানোর ব্যবস্থা আমরা করে দিব। ভাবা যায়? 

নটরডেম কলেজ মানেই অনুপ্রেরনার ভাণ্ডার

দেশের প্রথিতযশা এই মানুষগুলো্কে নিশ্চই আমরা চিনি। যাদের শিকড় এই নটরডেম কলেজ। ডঃ কামাল হোসেন, ডঃআইনুন নিশাত,শাইখ সিরাজ,ফরিদুর রেজা সাগর,তারেক মাসুদ,আজাদ আবুল কালাম,হাসানুল হক ইনু,ইয়াফেস ওসমান,তাহসান খান,বাপ্পা মজুমদার,শিরোনামহীনের জিয়াউর রহমান, সিয়াম,প্রথম এভারেস্ট জয়ী বাংলাদেশী মুসা ইব্রাহীম প্রমুখ।  

শেষ কথা 

নটরডেম কলেজ সম্পর্কে বলতে ক্লান্ত লাগেনা। যতই বলিনা কেন  কম বলা হবে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের জন্য নটরডেম কলেজ হতে পারে আপনার জন্য বেস্ট অপশন। এর পরবর্তী ধাপে যাওয়ার সঠিক গাইড লাইন হতে পারে নটরডেম কলেজ। 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url